স্বদেশ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ব্যবসায়ীকে খুন করে মাথা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ গতকাল মো. বিল্লাল হোসেন নামে ওই ব্যবসায়ীর মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করেছে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের কলতাপাড়া মীরেরটেক এলাকা থেকে। বিল্লাল হোসেন কলতাপাড়া মীরেরটেক গ্রামের মৃত রিয়াজউদ্দিনের ছেলে। গত রবিবার রাতে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। নিহতের মাথাটি উদ্ধার করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। বিল্লাল মীরেরটেক বাজারে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন।
এদিকে গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকায় তালাক দেওয়ার জেরে সাবেক স্ত্রী মহসিনা আক্তারকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন শরীফুল আলম নামে এক ব্যক্তি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মহসিনা রংপুরের পীরগাছা এলাকার মজিবুর রহমানের মেয়ে। শরিফুল আলম নীলফামারী সদর উপজেলার বোটেরহাট গ্রামের নুর আলমের ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ এলাকায় রুহুল আমিনের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। একই জেলার শ্রীপুর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী মর্জিনাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী সজীব মিয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার রাতে উপজেলার মুলাইদ গ্রামে। মর্জিনা কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার গাঙ্গাটিয়া গ্রামের মৃত হাতিমের মেয়ে। পুলিশ সজীব মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি ময়মনসিংহে নান্দাইল উপজেলার বাত্বআদী গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে।
এ ছাড়া হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় মেয়ের বাড়িতে দুপক্ষের সংঘর্ষে বৃদ্ধা সবজান বিবি নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নের কালিদাসটেকা গ্রামের। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
সোনারগাঁও : উপজেলার মীরেরটেক এলাকায় বাড়ির পাশের গভীর জঙ্গলে গতকাল সকালে মো. বিল্লালের মস্তকবিহীন লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। তালতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আহসান উল্লাহ জানান, বিল্লাল হত্যার কারণ ও এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। নিহতের স্ত্রী রুমা আক্তার জানান, তার স্বামী রাতে দোকান বন্ধ করে ওয়াজে যাবেন বলেছিলেন। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফিরে আসেননি।
গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুরের জিএমএস কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিক মহসিনা আক্তার এক সপ্তাহ আগে পারিবারিক কলহের জেরে শরিফুল আলমকে তালাক দেন মহসিনা আক্তার। এরই জের ধরে গতকাল সকাল ৭টার দিকে শরিফুল আলম হঠাৎ বাসায় এসে ঝগড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে ধারালো বঁটি দিয়ে মহসিনাকে কুপিয়ে জখম করেন। মহসিনার সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় তিনি আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই ঘটনাস্থলে মারা যান মহসিনা । খবর পেয়ে পুলিশ এসে শরিফুলকে হাসপাতালে পাঠায়।
এদিকে শ্রীপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান জানান, মর্জিনা ও তার স্বামী সজীব মিয়া মুলাইদ গ্রামের জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ভাড়া থেকে ভাঙাড়ির দোকানে কাজ করতেন। সম্প্রতি সজীব স্ত্রীকে পরকীয়ার কারণে সন্দেহ করেন। এ নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সজীব ও মর্জিনার মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সজীব স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট করলে মর্জিনা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় নিহতের স্বজনরা সজীব মিয়াকে আটক করেন। এ ঘটনায় নিহতের মা ছালেহা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সেই মামলায় সজীব মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতে সোপর্দ করে।
বানিয়াচং : উপজেলার কালিদাসটেকা গ্রামের লুৎফুর মিয়া ও সুরুজ আলী মিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত রবিবার বিকাল ৪টায় উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে গুরুতর আহত হন লুৎফুর মিয়ার শাশুড়ি বৃদ্ধা সবজান বিবি। সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তির পর রাত ১২টায় তিনি মারা যান।
সবজান বিবি উপজেলার একই ইউনিয়নের জাতুকর্ণপাড়া গ্রামের মৃত নূর হোসেন মিয়ার স্ত্রী। মেয়ের বাড়িতে ঘটনার দিনই বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। ঘটনার পর পরই সুরুজ মিয়ার পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমরান হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।